মো: এমদাদুল হকঃ ‘‘ছাত্র, শিক্ষক ,কৃষক ভাই ইঁদুর দমনে সহয়োগিতা চাই’’ এই প্রতিপাদ্য সামনে রেখে রাজশাহী অঞ্চলে ইঁদুর নিধন ২০২৪ অভিযান উপলক্ষে আলোচনা ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে। আজ বুধবার ৩০ অক্টোবর বেলা ৩টায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এর উদ্বোধন করেন রাজশাহী অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালকক কৃষিবিদ মাহামুদুল ফারুক।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে রাজশাহী অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালকের অডিটরিয়ামে আয়োজিত উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মোছা: উম্মে ছালমা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কৃষিবিদ শামসুদ্দিন মিঞা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রাজশাহী অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালকের কার্যালয়ের উপরিচালক কৃষিবিদ ড.মো.মোতালেব হোসেন।
এছাড়া অনুষ্ঠানে অনান্য অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নওগাঁ, নাটোর, চাঁপাইনব্বাগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ও রাজশাহী সরেজমিন কৃষি বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানি কর্মকর্তা, নওগাঁ, নাটোর, চাঁপাইনব্বাগঞ্জ জেলার সকল উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের, কৃষি অফিসার, কৃষি সম্প্রসাণ অফিসার অনান্য সরকারি অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারি ও বিভিন্ন পেস্টি সাইড কম্পানির কর্মকর্তাগন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে।
অনুষ্ঠানে ইঁদুর নিধন অভিযান-২০২৩ সালের রাজশাহী অঞ্চলে চারজন কৃষক বেশি সংখ্যক ইঁদুর নিধন করায় পুরুস্কৃত হন। কৃষক পর্যায়ে পুরুস্কৃতরা হলেন নওগাঁর, বদলগাছী উপজেলার চকবেনী গ্রামের শুকা এক্কার ছেলে সনাতন এক্কা ৫৫৩৬৪টি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার, দেলবাড়ি গ্রামের সুন্দর টুডুর ছেলে মতি টুডু ৩৭৪৫০টি, রাজশাহীর পাবা উপজেলার পাকুড়িয়া গ্রামের একাব্বর মন্ডলের ছেলে চাঁদ মিয়া ৩২৬৯২টি এবং নাটোর সদর উপজেলার দিয়ার সাতুরিয়া গ্রামের নূর চাদের ছেলে সাইদুর রহমান ২২৩০০টি ইঁদুর মেরে পুরুস্কৃত হন।
তিনজন উপসহকারী কর্মকর্তা বেশি সংখ্যক ইঁদুর নিধনে উৎসা প্রদান করায় নগদ অর্থ, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়। তারা হলেন নওগাঁর বদলগাছি উপজেলার মো.আলমগীর হোসেন৬০৪৮৭টি, চাঁপাইনব্বাগঞ্জ সদর উপজেলার আহম্মেদ আবু আল আমিন ৩৪০৬৫টি রাজশাহীর পবা উপজেলার মো. মাহাবুবুর রহমান ৩২৯১৫টি। এছাড়াও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার বসকৈল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৬৫৮০টি উপজেলা পর্যায়ে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার ১,৯২,৩০০ টি ইঁদুর মেরে পুরুস্কৃত হন।
অনুষ্ঠানে আলোচকগণ জানান, খরা, বন্যা, ঝড়, জলোচ্ছ্বাস প্রভিৃত কারণে প্রতি বছরই কমবেশি ফসলহানি ঘটে। এ ছাড়া ইঁদুর দ্বারা মাঠের এবং গুদামের অনেক ফসল নষ্ট হয়। ইঁদুর যা খায়, তার চেয়ে বেশি নষ্ট করে। তা ছাড়া ইঁদুরের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের রোগ ছড়ায়। ইঁদুর মুরগির খামারে গর্ত করে মুরগির ডিম ও ছোট বাচ্চা খেয়ে ফেলে।
ইঁদুর যে শুধু দানাদার ফসলের ক্ষতি করে তাই নয়, এরা অন্যান্য ফসল ও ফলমূল, আসবাবপত্র, বাঁধ, সড়ক, মহাসড়ক প্রভৃতির ক্ষতি করে। বৈদ্যুতিক তার ও যন্ত্রপাতিও ইঁদুরের হাত থেকে রেহাই পায় না। ইঁদুর মানুষের ব্যক্তিগত এবং জাতীয় শত্রু। এক্ষতির বিষয় বিবেচনা করে ১৯৮৩ সাল থেকে জাতীয়ভাবে ইঁদুর নিধন অভিযান পরিচালিত হয়ে আসছে। বর্ষাকালে ইঁদুর নিধনের সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। এ সময় দেশের মাঠঘাট পানিতে তলিয়ে যায় এবং খাবার কমে যায় বিধায় ইঁদুর ঝোপজঙ্গল কিংবা উঁচু জায়গায় আশ্রয় নেয়। এসব আশ্রয়স্থলে উপযুক্ত দমনপদ্ধতি প্রয়োগ করে সহজেই ইঁদুর মারা যায়। এ সময় ইঁদুরের ব্যাপক ক্ষতি থেকে ফসল রক্ষা করার পাশাপাশি ইঁদুর নিধন কার্যক্রমকে আরও জোরদার করার আহ্বান জানান।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস